কাসুন্দি রেসিপি

কাসুন্দি রেসিপি-এবার কাসুন্দি হবে বাড়িতেই!

কাসুন্দি দিয়ে কাঁচা আম অথবা পেয়ারা, সিঙ্গারা বা রোল খাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এমনকি এই, কাসুন্দি দিয়ে পাকা আনারসও খেতেও দুর্দান্ত লাগে। আরো আছে ইলিশ-কাসুন্দির স্বাদ, যা চাঁদে বসে খেলেও ভাল লাগবে। কাসুন্দি রেসিপি খুজছেন? যদিও গরম আসতে এখনো অনেক দেরী! তবুও! কাসুন্দি কিন্তু কম-বেশী সব মৌসুমী ফলের সাথে যায়! আর এমনিতে স্নাক্স ছাড়াও অনেকে রান্নার কাজে কাসুন্দি ব্যবহার করে থাকেন।

কিন্তু সবাই বাড়িতে কিভাবে মজাদার কাসুন্দি তৈরী করতে হয় তা জানেনা! বিধায় অনেকে বাইরে থেকে কিনে আনেন। বোতলজাত কাসুন্দির ভেতলে অনেক ধরণের কেমিক্যাল মেশানো থাকে তাই সেগুলো অনেক সময় আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুব একটা সুখকর কিছু নাও হতে পারে, তাছাড়া টাটকা স্বাদের কাসুন্দির স্বাদের কাছে বোতলজাত পণ্যের কাসুন্দির স্বাদ একেবারেই নস্যি। এখন উপায়! তাই আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাকে জানাব কীভাবে ঘরে বসে আপনি একদম হোমমেড স্বাস্থ্যকর, সুস্বাদু কাসুন্দি তৈরী করে নিতে পারেন! তো চলুন,শুরু করা যাক!

কাসুন্দি রেসিপি এর জন্য যে সকল উপাদান প্রয়োজন পড়বে একনজরে তা দেখে নিন:

সরিষা দেড় কাপ আপনি যদি পরিমাণ বাড়াতে চান, তবে অন্য উপকরণগুলোও বাড়াতে হবে। এরপর ধনে- ১ চা চামচ, জিরা- ১ চা চামচ, জইন- ১ চা চামচ, রাঁধুনি মশলা -১ চা চামচ, মৌরি -১ চা চামচ, শুকনা মরিচ- ১ টি, গোলমরিচ -১ চা চামচ, গুড়াহলুদ গুড়ো -১ টেবিল চামচ, তেজপাতা নিতে হবে -১টি, লবণ নিতে হবে -১ চা চামচ, দারুচিনি – ২ টুকরা

আরো পড়ুনঃ

চিলি চিকেন রেসিপি দেখে নিন!হাজীর বিরিয়ানি রেসিপি-বাসায় হবে হাজির বিরিয়ানি !কেক বানানোর রেসিপি-মজাদার কেক বাড়িতেই!ভিন্ন রকমের ডিম ভুনা রেসিপি!ফুসকা রেসিপি দেখে নিন-বাড়িতেই হবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে! 

প্রথম দিন:

ভালো মানের কাসুন্দি তৈরী করতে বাজার থেকে ভালো মানের সরিষা কিনে আনতে হবে, কারণ সরিষার ঝাঁজ সঠিক হওয়াটা জরুরী। এখন আরো একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যেনো সরিষায় কোনো ধরণের ময়লা না থাকে এবং সরিষাগুলো যেনো তিতা না হয়।

দ্বিতীয় দিন:

ভালো করে সরিষাগুলোকে ধুয়ে রোদে শুকোতে দিতে হবে। আর অন্য মশলাগুলো ভালোভাবে চেলে এবং ধুয়ে রোদে শুকোতে দিতে হবে। মশলায় থাকা ময়লা খুব ভালোভাবে ধুয়ে বাছাই করে নিতে হবে।

তৃতীয় দিন-৮ম দিন:

ভালো করে কাসুন্দির সরিষা এবং বাদ-বাকি মশলাপাতিগুলো রোদে দিয়ে শুকিয়ে মুচমুচে করতে হবে। টানা ৫ দিন ধরে শুকিয়ে কাসুন্দি তৈরী করার জন্য উপযুক্ত করে তুলতে হবে।

এরপর একটি মাটির পাতিল জোগাড় করতে হবে। তবে হ্যাঁ! আরেকটা বিষয় মাথায় রাখবেন,কোনো ধরণের মেটালের পাতিল বা হাড়ি এখানে ব্যবহার না করেন। যদি করে থাকেন, তাহলে সেই ক্ষেত্রে ক্যামিক্যাম রিয়েকশন ঘটার সম্ভাবনা থাকতে পারে বা আসল স্বাদটাই লুপ্ত হয়ে যেতে পারে।

  • এবার কিছু পরিমাণ সাদা ও কালো সরিষা সামান্য লবন ও কাঁচামরিচ দিয়ে ব্লেন্ড বা পাটায় বেটে নিন। এতে সরিষায় তেতোভাব হবে না।
  • কাঁচা আম টুকরো করে কেটে ব্লেন্ড করে নিন। তবে আপনি তেতুঁলও ব্যবহার করতে পারেন।
  • সব উপকরণ তৈরি হওয়ার পর একটা বাটিতে লবন, তেল, ভিনেগার ও চিনি বাদে সব একসাথে মিশিয়ে সরিষার মিশ্রণ বা পেস্ট তৈরি করে নিন।
  • একটা পাত্রে ১০ কাপ পানি দিয়ে সরিষা এবং বাকি মশলাগুলো দিয়ে সাড়া দিন এবং সাড়া রাত মিডিয়াম আঁচে রান্না চালিয়ে যেতে হবে। রান্নার মাঝে মাঝে নেড়ে দিতে হবে, খুব বেশি পাতলা যাতে না হয়ে যায় খেয়াল রাখতে হবে।
  • সবদিক দিয়ে মিশ্রণটি ফুটে উঠলে লবন দিয়ে নাড়ুন এবং কিছুক্ষন পরে চিনি ও ভিনেগার দিয়ে দিন।
  • কাসুন্দি থেকে একটা সুন্দর ফ্লেভার বা ঘ্রাণ আসলে ও পানি কমে এলে কাসুন্দি নামিয়ে নিন।
  • মিশ্রণটি ঠাণ্ডা হলে একটা শুকনো বয়ামে ভরে নিন। সবচেয়ে ভালো হয়, যদি কাসুন্দি বানানোর ১ সপ্তাহ পর থেকে খাওয়া শুরু করেন। এতে ধীরে ধীরে সব মশলা কাসুন্দির সাথে ভালভাবে মিশে যাবে।

এভাবেই তৈরী হয়ে যাবে পারফেক্ট এবং মজাদার স্বাদের কাসুন্দি!

সতর্কতা

রান্নার প্রথমে একটি বিষয় মনে রাখবেন। ভালো খাবার তৈরি করার প্রথমে জীবাণুমুক্ত, নিরাপদ উপকরণ দরকার। কারণ শরীরের ইমিউন সিস্টেম ঠিক রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সঠিক উপকরণে তৈরি খাবারের বিকল্প নেই। ভেজাল উপকরণ দিয়ে তৈরি খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো বাড়বেই না; বরং আপনার শরীর রোগের স্বর্গ রাজ্য হয়ে যাবে।

শেষ কথা 

আশা করি ফুডলিংক বিডির এই কাসুন্দি রেসিপি টি ভালো লেগেছে। কোন প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট বক্সে দয়া করে জানাবেন। ও হ্যাঁ, আপনিও কিন্তু এরকম সুন্দর সুন্দর ফুড রেসিপি লিখতে বা ইউটিউবে রান্নার ভিডিও বানাতে পারেন! তাহলে এখনি যোগাযোগ করুন।

আরও ভালো জানার জন্য ইউটিউব চ্যানেল থেকে ঘুরে আসতে পারেন। আশা করি কাসুন্দি বানানোর ভিডিওটি দেখে আরও সহজে বাসায় রান্না করতে পারবেন হোটেলের চেয়েও সুন্দর করে। প্রবন্ধটি সংরক্ষণে রাখতে আপনার সোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করে রাখুন। যাতে প্রয়োজনে খুজে পেতে সহজ হয়। সাথে থাকার জন্য অন্তরের অন্তরস্থল থেকে এক রাশ প্রিতি ও ভালোবাসা রইল।

লেখাটি আবার পড়তে পড়তে চান? আপনার সোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *